বিশ্বকাপের ‘এফ’ গ্রুপের ম্যাচে কানাডাকে ১-০ গোলে হারিয়েছে বেলজিয়াম। আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টায় শুরু হয় ম্যাচটি। দারুণ খেলেও একটি গোলের দেখা পায়নি কানাডা। গোলের পর গোল মিস করেই চলেছেন। বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন কর্তোয়া। বাতসুয়াইয়ের একমাত্র গোলে ১-০ ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বেলজিয়াম। কোনোমতে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে দলটি। ম্যাচে ২০টি শট নিয়েছিল কানাডা, একটিও লক্ষ্যভেদ হয়নি। অন্যদিকে মাত্র ৯টি শট নেয় বেলজিয়াম। তবে বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল বেলজিয়াম। তারা ম্যাচের ৫৫ শতাংশ সময় বল পায়ে রাখে।

প্রথমার্ধে দুর্দান্ত খেলেছে কানাডা। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাদের। গোলের দেখা পায়নি। কখনো কর্তোয়া দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছে, কখনো তারা নিজেরাই মিস করেছে। ১৩টি আক্রমণে একটিও হয়নি গোল। অন্যদিকে ১ গোলে এগিয়ে আছে বেলজিয়াম। ৪টি আক্রমণ করে ১টি গোল! প্রথমার্ধে ৫৫ শতাংশ সময় বল পায়ে ছিল বেলজিয়ানদের।

কানাডার সামনে কর্তোয়া দেয়াল হয়ে দাঁড়ালেও গোল দিয়েছে বেলজিয়াম। এক ড্রপেই গোল। ৪১ মিনিটে মাঝ মাঠ দিয়ে উড়ে ডি বক্সের সামনে বাতসুয়াইর কাছে আসে বল। প্রথম স্পর্শেই বল পাঠান কানাডার জালে। ১ গোলে এগিয়ে যায় বেলজিয়াম। অন্যদিকে কানাডা খেলছে দুর্দান্ত। একের পর এক আক্রমণ করেও গোলের দেখা পায়নি। কারণ একটাই, কর্তোয়া।

শুরুতেই পেনাল্টি তুখে দেন এর পর এক আক্রমণ থেকে বাঁচান দেশকে। কানাডার বিপক্ষে কর্তোয়ার এমন পারফরম্যান্সে বেলজিয়াম এখনো গোল হজম করেনি। নিশ্চিত গোল বাঁচিয়ে দিয়েছেন কমপক্ষে তিনবার। এখন পর্যন্ত ১১টি শট নিয়েছে কানাডা, অন টার্গেট ছিল ২টি। বিপরীতে বেলজিয়াম নিয়েছে মাত্র ৩টা। ৯ মিনিটে পেনাল্টি পেয়েও মিস করেছে কানাডা। রুখে দেন কর্তোয়া। ফাউল করেন বেলজিয়ামের মিডফিল্ডার হলুদ কার্ড দেখেন। পেনাল্টি পায় কানাডা। বেশ কিছুক্ষণ সময় নিয়ে মেরেও মিস করেন আলফোনসো ডেভিস। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন কর্তোয়া। বিশ্বকাপে পেনাল্টি রুখে দেওয়া রেকর্ড গড়েছেন কর্তোয়া। ১৯৬৬ সালের পর কেউ আর পারেনি তার মতো।

৩৬ বছর পর বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ তৈরি করেছে কানাডা। নতুন এক প্রজন্মের বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ। যারা বেলজিয়ামের বিপক্ষে জিতবে এমন আশা করছে না। তাদের বিশ্বাস তারা ভালো করবে। কানাডা এর আগে একবারই বিশ্বকাপ খেলেছিল। তাও ১৯৮৬ সালে। বিদায় নিয়েছিল গ্রুপপর্ব থেকেই। ৩৬ বছর পর আবার তারা খেলছে। নিজেরা সেরা দল না হলেও নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে কার্পণ্য করবে না।

যেমনটা বলেছেন তাদের তারকা মিডফিল্ডার জনাথান ওসোরিও, ‘আমরা খুব বেশি কিছু আশা করছি না। তবে আমাদের বিশ্বাস আছে। নিজেদের প্রতি আমরা খুবই কনফিডেন্ট। আমরা সবাইকে দেখাতে চাই আমরাও ফুটবল খেলুড়ে জাতি। আমরাও বিশ্বের সেরা সেরা দলের সঙ্গে লড়াই করতে পারি। আমরা মানুষকে বিস্ময় উপহার দিতে চাই।’

অন্যদিকে বেলজিয়াম এ নিয়ে ১৩তমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলছে। গেল আসরে সেমিফাইনালে ফ্রান্সের কাছে হেরে তৃতীয় হয়ে শেষ করেছিল। এছাড়া গেল দুই বিশ্বকাপে রেড ডেভিলসরা গ্রুপ পর্বের ছয়টি ম্যাচের ছয়টিই জিতেছিল। এবারও তারা জয় ভিন্ন অন্য কিছু চিন্তাও করছে না। তবে এবার অবশ্য কঠিন গ্রুপেই পড়েছে তারা। যেখানে রয়েছে গেল আসরের ফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়া, মরোক্কো আর কানাডা।

তারকাবহুল দল বেলজিয়ামের অবশ্য কানাডার বিপক্ষে খেলার খুব বেশি খেলার রেকর্ড নেই। এর আগে একবারই ম্যাপল লিভসের মুখোমুখি হয়েছিল তারা। তাও ৩৩ বছর আগে, ১৯৮৯ সালে। প্রীতি ম্যাচের সেই দেখায় ২-০ গোলে জিতেছিল বেলজিয়াম। ৩৩ বছর পর আবার তাদের মুখোমুখি বেলজিয়াম। ফেভারিট হিসেবে জয়ের পাল্লা তাদের দিকেই ভারী। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপে যেভাবে আন্ডারডগরা ভেল্কি দেখাচ্ছে তাতে নিশ্চিত করে তো কিছুই বলা যায় না।

রাকিব/এখন সময়